সর্বশেষ আপডেট : ৪ ঘন্টা আগে
বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

প্রাথমিকের সাড়ে ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলা পড়তে পারে না!

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশনের জরিপ অনুযায়ী দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির প্রায় সাড়ে ৯ শতাংশ শিশু বাংলা পড়তে পারে না। এর মধ্যে রয়েছে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ১০ দশমিক ২৮ শতাংশ ছেলে শিক্ষার্থী ও ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী।

এর বাইরে ১৮ দশমিক ০৪ শতাংশ শিক্ষার্থী ৫টির মধ্যে কমপক্ষে ৪টি শব্দ শনাক্ত করতে পারে আর ৬১ দশমিক ৯৫ শতাংশ ছেলে শিক্ষার্থী এবং ৫৩ দশমিক ১৪ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী ৩টি বা তার কম ভুল উচ্চারণসহ একটি কাহিনি সাবলীলভাবে পড়তে পারে।

গণিতেও একই অবস্থা। এই বিষয়ে ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ শিশু একক অঙ্ক বিশিষ্ট সংখ্যা শনাক্ত করতে পারে না। শুধুমাত্র ২৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ শিক্ষার্থী দুটি যোগ সমস্যার সমাধান করতে পারে। আর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠ্য বইয়ের দুটি বিয়োগ ও দুটি ভাগ সমস্যার সমাধান করতে পারে না পর্যায়ক্রমে ৭৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ৯৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ শিশু।

সব থেকে করুণ অবস্থা ইংরেজিতে। এই বিষয়ে ছেলে শিশুর মধ্যে ১৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং মেয়ে শিশুর মধ্যে ১৫ দশমিক ২২ শতাংশ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ইংরেজি বইয়ের একটি বর্ণও পড়তে পারে না। ২৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ শিশু ৫টির মধ্যে কমপক্ষে ৪টি ইংরেজি শব্দ শনাক্ত করতে পারে। আর ৮৪ দশমিক ১৫ শতাংশ ছেলে শিক্ষার্থী এবং ৮২ দশমিক ৮৬ শতাংশ মেয়ে শিক্ষার্থী ৩টি বা তার কম ভুল উচ্চারণসহ একটি কাহিনি সাবলীলভাবে পড়তে পারে না।

আজ বুধবার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে রাজধানীর মিরপুরের ইউরোপ বাংলাদেশের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘শিক্ষার্থীদের শিখন স্তরের বর্তমান অবস্থা ও শিক্ষার গুণগতমান অর্জন’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে এই জরিপ ফল তুলে ধরা হয়।

দা সাউথ এশিয়ান অ্যাসেসমেন্ট অ্যালায়েন্স কমিউনিকেশনস অ্যান্ড কোলাবোরেটিং ফর চেঞ্জ (ইওএল) প্রকল্পের মাধ্যমে ওয়েভ ফাউন্ডেশন খুলনা ও রাজশাহী জেলায় ৮৮টি গ্রামের ৭১টি বিদ্যালয়ে এবং ১ হাজার ৭৬০টি পরিবারের ১ হাজার ৫৩৩জন শিশুর ওপর সিটিজেন লেড অ্যাসেসমেন্ট নামক জরিপটি পরিচালনা করা হয়।

শিক্ষার্থীদের (৫-১৬ বছর বয়সী) অভিগম্যতা পর্যালোচনা ও শিক্ষার গুণগতমান পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের মৌলিক পঠন ও গাণিতিক শিখন যাচাই করার জন্য এই জরিপটি পরিচালনা করা হয়।

এই জরিপে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের শিক্ষাগত যোগ্যতাও যাচাই করা হয়। জরিপে দেখা গেছে, যে সকল শিশুর পিতা-মাতার মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ছিল, তারা ভাষার দক্ষতার ক্ষেত্রে ভালো করেছে, তাদের তুলনায় স্বল্প শিক্ষিত পিতা-মাতার শিশুদের ভাষার দক্ষতা সন্তোষজনক ছিল না।

যে সকল শিশুর পিতা-মাতার মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ছিল, তাদের মধ্যে ৪৫৯জন শিশু বাংলায় এবং ১৯২জন শিশু ইংরেজিতে কাহিনি পড়তে পেরেছে। আর যে সকল অভিভাবকের প্রাথমিক বা কম শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল, তাদের শিশুদের মধ্যে মাত্র ২৩জন শিশু বাংলায় এবং ৭৮ জন শিশু ইংরেজিতে অক্ষর শনাক্ত করতে পেরেছে।

এই জাতীয় সংলাপে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে বেশ কিছু সুপারিশ দেয়া হয়। বলা হয়েছে, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা ৪ অনুসারে সকলের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং সকলের সমান শিক্ষা লাভের সুযোগের কথা বলা হয়েছে।

অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে সকল ছেলে ও মেয়ে যাতে কার্যকর, ফলপ্রসূ অবৈতনিক, সমতাভিত্তিক ও গুণগত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভের সুযোগ পায় তা নিশ্চিত করা। এ প্রেক্ষিতে সরকারের উদ্যোগে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ওয়েভ ফাউন্ডেশন-এর ইওএল প্রকল্পের পক্ষ থেকে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

সুপারিশ গুলো হলে-

শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা।
অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক শিক্ষা নিশ্চিত করা।
শিক্ষকদের ক্লাস পরিচালনায় নিয়মিতকরণে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা।
শিক্ষার গুণগতমান অর্জনে শ্রেণির পড়া শ্রেণিতেই সম্পন্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা।
অবকাঠামোগত উন্নয়ন তথা পর্যাপ্ত ক্লাসরুম ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করা।
শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
শিক্ষকদের বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা।
শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা।
সময়োপযোগী পাঠ্যপুস্তকসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ তৈরি ও বিতরণ করা।
স্কুল ফিডিং কার্যক্রম প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ করে দুর্যোগপ্রবণ এলাকাতে চালু করা।
শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে নীতিনির্ধারক, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সকল অংশীজনের মতামতের আলোকে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা।

ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক কানিজ ফাতেমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এস এম জুলফিকার আলী, স্ট্রিট চাইল্ডের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইমতিয়াজ হৃদয় প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

এ বিভাগের অন্যান্য খবর

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: